প্রতিতিতিত্বকারী মািৃত্বঃ ক্ষমিায়ি অথবা শ াষণ -একটি দা শতিক অিুসন্ধাি
-
TypePrint
- CategoryNon-Academic
- Sub CategoryNon Fiction
- StreamPhilosophy-Non Fiction
‘মা’ শব্দটি গভীর ব্যঞ্জনাময় এবং এর পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। আমরা যেমন ‘জন্মদাত্রী মা’ কে ‘মা’ বলি, তেমনি মাতৃসুলভ স্নেহ, ভালোবাসা, যত্ন যার থেকে পাই, তাকেও অনেক সময় ‘মা’ বলে ডাকি। আমাদের সংস্কৃতিতে ধরিত্রীকে মা বলে সম্বোধন করা হয়। ‘মা’ এর ধর্ম মাতৃত্ব।
পৃথিবীর এই সৃষ্টির মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে মানুষ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে নানান বিবর্তন ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। বিবর্তন যে কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে তাকে সময়ের সাথে সাথে লড়ার উপযুক্ত করে তোলে অর্থাৎ সে সময়োপযোগী হয়ে ওঠে। কিন্তু বিবর্তনের সাথে সাথে সকল সমস্যা বা সকল জটিলতাই একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় না। কার্যকারণ সম্পর্কের সমীকরণ মেনে বলা চলে, এই সমস্ত সমস্যাগুলির কিছু কারন থাকেই এবং সেই কারণগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারলে তার সমাধান করাও সম্ভব হতে পারে। প্রকৃতির অংশ হিসেবে মানবজীবনেও নানান সুবিধা-অসুবিধা এবং সমস্যা বর্তমান। এমনই এক সমস্যা, যা সময়ের সাথে সাথে ক্রমশ: বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা হল প্রজননগত সমস্যা। সন্তানহীনতার সমস্যা যেমন মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে তেমনি তার সমাধানের নানান পথও ভাবনা-চিন্তা এবং গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞান আবিষ্কার করে চলেছে। সময়ের সাথে নানান পরিবর্তন বা বিবর্তন ঘটে থাকলেও, মাতৃত্বের মর্যাদা বা তার গুরুত্ব লক্ষ লক্ষ বছরেও এতটুকুও কমেনি। মানুষ বা ইতরপ্রাণী সকলের ক্ষেত্রেই মায়ের গুরুত্ব সমান
কিন্তু সব সময় মাতৃত্ব এবং সন্তান উৎপাদন - এই সম্পর্ক স্বাভাবিক নিয়মে চলে না। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কারণে বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এই সমস্যা চিরস্থায়ী নয়। এই সমস্যার চিকিৎসা সম্ভব। যে কোনো সমস্যারই মূল কারণ খুঁজে পেলে তা সমাধান করা যেমন সম্ভব এবং সহজসাধ্য হতে পারে, এই ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকমভাবে সমাধানযোগ্য বলা যায়। সন্তানহীনতা একটি সমস্যা, যার পেছনে উপযুক্ত কারণ বর্তমান এবং সে সমস্যার সমাধানও সম্ভব। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে বিনা কারণে কোন কিছু ঘটেনা। তাই কারণ এর সন্ধান পেলে সেটির বিনাশে যেমন কার্যের বিনাশ সম্ভব হয়; একইভাবে মাতৃত্বহীনতার কারণসমূহের বিনাশে মাতৃত্বহীনতা দূর করাও সম্ভব হয়। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে কোনোভাবেই তা সম্ভব হয়না, সেই সব ক্ষেত্রেই বিকল্প মাতৃত্বের প্রসঙ্গ। অর্থাৎ সকল রকম প্রচেষ্টাই যখন স্বাভাবিকভাবে সন্তান উৎপাদনে ব্যর্থ হয় তখনই বিকল্প পথের সাহায্য নেওয়া হয়।
সন্তানহীনতার সমস্যার নানান জাতীয় সমাধান বর্তমানে লভ্য। প্রথমে যে সমাধানের কথা সাধারণতঃ মানুষের মনে আসে, তা হ'ল দত্তক নেওয়া। যদিও এই দত্তক গ্রহণ নতুন কোনও বিষয় নয়, মহাভারতের আমলে বা তার পূর্ববর্তী যুগেও দত্তক নেওয়ার প্রথার চল ছিল। কিন্তু দত্তক গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক সন্তানহীন দম্পতিই একটু নিমরাজি থাকেন, কারণ যে সন্তানকে তাঁরা গ্রহণ করছেন সেই সন্তানের জন্ম বৃত্তান্ত বা তার পারিবারিক ইতিহাস অথবা জিনগত গঠন কোনও কিছুই দম্পতিদের কাছে জানা থাকে না। ফলে স্বাভাবিক কারণেই তাঁদের মধ্যে এক আশঙ্কা জন্ম নেয় বা অদূর ভবিষ্যতের বিষয়ে চিন্তা করে এক ধরনের দুশ্চিন্তা তাঁদের ভেতর তৈরী হয়।
এছাড়াও বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার অন্যতম উপহার হ'ল আই.ভি.এফ. (I.V.F.) পদ্ধতি এবং প্রতিনিধিত্বকারী মাতৃত্বের (Surrogacy) পন্থা। আই.ভি.এফ. (I.V.F.) অর্থাৎ ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (In Vitro Fertilization) পদ্ধতিতে দম্পতিদের শুক্রাণু এবং ডিম্বানু সংগ্রহ করে গবেষণাগারে কৃত্রিম পদ্ধতিতে ভ্রূণের সৃষ্টির প্রথম ধাপের কাজ করে, সেই ভ্রূণটিকে মাতৃগর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়, যাকে আমরা "টেস্ট টিউব বেবি"(Test Tube Baby) বলি। এই পদ্ধতির প্রয়োজন তখনই দেখা দেয় যখন স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক যৌন মিলনের মাধ্যমে সন্তান উৎপাদনে বাধা আসে। এই ক্ষেত্রে শারীরিক ত্রুটি বা খামতি উভয়েরই থাকতে পারে, আবার যে কোনও একজনেরও থাকতে পারে। কিন্তু স্ত্রীর জরায়ুর অবস্থা স্বাস্থ্যকর থাকলে তবেই গবেষণাগারে তৈরী ভ্রূণ তাঁর গর্ভে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। কিন্তু যখন স্ত্রীর জরায়ুতে অস্বাভাবিকতা থাকে, তখনই প্রয়োজন হয় জরায়ু বা গর্ভ ভাড়া (Womb Rent) নেওয়ার, যাকে আমরা বলি সারোগেসি বা প্রতিনিধিত্বকারী মাতৃত্ব। এই প্রসঙ্গে বলে নেওয়া ভালো যে সারোগেসির বাংলা প্রতিশব্দ হিসাবে ‘প্রতিনিধিত্বকারী মাতৃত্ব’ শব্দ-বন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে ।
পঞ্চদশ শতাব্দীতে লাতিন শব্দ “Surrogatus” থেকে “Surrogate” এবং “Surrogacy” শব্দের উৎপত্তি। শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হলো- "অন্য কারোর জায়গায় রাখা" অথবা “বিকল্প"। ‘প্রতিনিধিত্বকারী মাতৃত্ব’ এই শব্দ বন্ধটির মধ্যেই বিষয়টির সংজ্ঞা লুকিয়ে আছে। এই ‘বিকল্প মাতৃত্বে’র পদ্ধতিতে একজন নারী মায়ের প্রতিনিধি হিসেবে মায়ের ভূমিকা পালন করে থাকেন। যখন এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যেখানে দম্পতিদের মধ্যে স্ত্রীর জরায়ুতে কোন জটিল সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা থাকে যার ফলে তিনি নিজের সন্তানকে গর্ভে ধারণ করতে পারেন না, এমন অবস্থায় অন্য একজন নারীর গর্ভ ভাড়া নেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে স্বামীর শুক্রাণু এবং স্ত্রীর ডিম্বাণুকে সংগ্রহ করে গবেষণাগারে ভ্রূণের প্রাথমিক স্তর তৈরি করে তা প্রতিনিধিত্বকারী মায়ের গর্ভে স্থাপন করা হয় এবং সেখানেই ভ্রূণটি পূর্ণতা লাভ করে এবং তার জন্ম হয়।
**Note: IIP Store is the best place to buy books published by Iterative International Publishers. Price at IIP Store is always less than Amazon, Amazon Kindle, and Flipkart.
COMMENTS
No Review found for book with Book title. প্রতিতিতিত্বকারী মািৃত্বঃ ক্ষমিায়ি অথবা শ াষণ -একটি দা শতিক অিুসন্ধাি